বাংলাদেশে ডিজিটাল কানেক্টিভিটি আরও বিস্তৃত করতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে গ্রামীণফোন। সম্প্রতি ইডটকো বাংলাদেশের সঙ্গে এক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এই চুক্তির আওতায় দেশজুড়ে স্থাপন করা হবে আরও ৫০০-এর বেশি টাওয়ার।
Table of Contents
ঘটনা ও চুক্তির বিস্তারিত
২০২৫ সালের জুলাই মাসে, ঢাকায় এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গ্রামীণফোন ও ইডটকো বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে এই চুক্তি স্বাক্ষর করে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ইডটকো বাংলাদেশ এই চুক্তির অধীনে ৫০০টিরও বেশি নতুন টেলিকম টাওয়ার স্থাপন করবে। যার ফলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক সুবিধা আরও সহজলভ্য হবে।
এই চুক্তির মাধ্যমে গ্রামীণফোন তাদের গ্রাহকদের আরও ভালো সেবার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। বিশেষ করে দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি বা সংকটকালীন সময়ে কানেক্টিভিটি নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, নতুন টাওয়ার স্থাপনের ফলে ইন্টারনেটের গতি এবং ভয়েস কলের মান আরও উন্নত হবে।
বিশেষজ্ঞ ও কর্মকর্তাদের মতামত
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (BTRC)-এর চেয়ারম্যান জহুরুল হক এই উদ্যোগকে সময়োপযোগী ও ইতিবাচক বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, “এটা বাংলাদেশের টাওয়ার কোম্পানি (towerco) নীতিমালার একটি সফল শুরু। দেশের সেবার মান উন্নয়নে এটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
এছাড়া, গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমান বলেন, “এই উদ্যোগের জন্য BTRC-এর নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা আমাদের গ্রাহকদের অভিজ্ঞতা উন্নয়নের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিই। এই নতুন টাওয়ার রোল-আউটের মাধ্যমে দেশের ডিজিটাল জীবনধারা আরও সমৃদ্ধ হবে।”

পূর্বের ঘটনা ও প্রেক্ষাপট
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ চালিয়ে আসছে। এরই অংশ হিসেবে ২০১৮ সালে বাংলাদেশে টাওয়ার কোম্পানি (tower sharing) নীতিমালা চালু করা হয়। এই নীতিমালার অধীনে দেশব্যাপী বিভিন্ন অপারেটরের সেবার গুণগত মান নিশ্চিত করতেই এই টাওয়ার ব্যবস্থাপনা চালু করা হয়।
এর আগে ২০২৩ সালে, গ্রামীণফোন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৩৫০টির বেশি টাওয়ার স্থাপন করেছিল। তবে তখনও দেশের কিছু প্রত্যন্ত এলাকায় ইন্টারনেট ও নেটওয়ার্ক সমস্যা ছিল। এই নতুন উদ্যোগ সেই ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইন্টারনেট নির্ভরশীলতা দিন দিন বাড়ছে। শিক্ষাক্ষেত্র, ব্যবসা, স্বাস্থ্যসেবা ও বিনোদনে ইন্টারনেট ছাড়া চলা কঠিন। এই টাওয়ার স্থাপন সেই ডিজিটাল সুবিধা সবার কাছে পৌঁছে দিতে সাহায্য করবে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও সম্ভাবনা
চুক্তি অনুযায়ী আগামী এক বছরের মধ্যেই এই ৫০০-এর বেশি টাওয়ার স্থাপন করা হবে। এর ফলে গ্রামীণফোন তাদের ৩জি ও ৪জি সেবার মান আরও বাড়াতে পারবে।
বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের ৯৮ শতাংশ এলাকায় দ্রুতগতির ইন্টারনেট পৌঁছে যাবে। পাশাপাশি, ভবিষ্যতে ৫জি সেবা চালুর ক্ষেত্রেও এই টাওয়ারগুলো ভূমিকা রাখবে।
গ্রামীণফোন সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানি পর্যায়ক্রমে আরও ১,০০০ নতুন টাওয়ার স্থাপনের পরিকল্পনা করছে। তারা চায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও যেন মানসম্মত কানেক্টিভিটি পৌঁছায়।
উপসংহার
ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণে নতুন এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। গ্রামীণফোন ও ইডটকো বাংলাদেশের এই অংশীদারিত্ব ভবিষ্যতে দেশের কানেক্টিভিটি আরও সহজলভ্য ও উন্নত করবে। গ্রাহকরা আরও ভালো মানের ইন্টারনেট ও কল সেবা পাবেন।
তথ্যসূত্র
- গ্রামীণফোন অফিসিয়াল প্রেস রিলিজ (জুলাই ২০২৫)
- BTRC ওয়েবসাইট: www.btrc.gov.bd
- The Daily Star রিপোর্ট (জুলাই ২০২৫)
ডিসক্লেইমার
এই প্রতিবেদনটি বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য উৎস, অফিসিয়াল প্রেস রিলিজ ও কর্তৃপক্ষের বক্তব্যের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছে। এখানে কোনো গুজব বা অনুমানভিত্তিক তথ্য ব্যবহার করা হয়নি।